কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে গম কাঁটা ও মাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক। এবছর গমে ভাল ফলন হওয়ায় খুশি উপজেলার কৃষকরা। অগ্রহায়ণ ও পৌষ মাসে জমিতে গম বীজ বপন করেন কৃষক। ফাল্গুনের শেষে ও চৈত্র মাসের প্রথম দিকে গম কাঁটা ও মাড়াই শুরু হয়। এরই মধ্যে অনেক জায়গায় গম কাটা ও মাড়াই শুরু হয়েছে।
উপজেলার হোগলবাড়িয়া ইউনিয়নের কৃষক তফিকুল ইসলাম জানান গম চাষে খুব বেশি খরচ হয় না কৃষকের। বীজ বপনের পর খুব বেশি সেচ বা সার দিতে হয় না। ফলে গম চাষে কম খরচে বেশি লাভবান হয় কৃষক। এবছর বিঘা প্রতি গম চাষে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা খরচ হয়েছে তার। এবার বিঘাতে ১৫ থেকে ১৬ মন গম হওয়ার সম্ভবনা আছে। যা বর্তমান বাজার মূল্য ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা। খরচ বাদ দিলে লাভের অংশ দাড়ায় ১৫ থেকে ১৬ হাজার টাকা।
দৌলতপুর উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী এবছর উপজেলায় পাঁচ হাজার ২৩০ হেক্টর জমিতে গম চাষ হয়েছে। এর মধ্যে চরাঞ্চলেই গমের চাষ হয়েছে দুই হাজার ৬৮০ হেক্টর জমিতে। এবছর চরাঞ্চলসহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে গমের ভাল ফলন হয়েছে।
দৌলতপুর উপজেলার চার ইউনিয়ন বিস্তির্ণ চর। বর্ষা মৌসুমে চরের জমি পানিতে ডুবে থাকে। তখন চরাঞ্চলের মানুষের কোন কাজ থাকে না। পানি চলে যাওয়ার সাথে সাথে এখানকার কৃষকরা চরাঞ্চলের জমিতে ধান, গম, শরিষা, ডাল, সবজি, চীনাবাদাম, পেঁয়াজ, রসুনসহ বিভিন্ন জাতের ফসল চাষে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। নদী ভাঙনে লোকসান পোষাতে মৌসুমের শুরুতেই আটঘাট বেঁধে চরের জমিতে নিরলসভাবে শ্রম ব্যয় করেন কৃষক।
চিলমারী বাংলাবাজার চরের কৃষক রাসেল সরকার জানান, ইতোমধ্যে গম কেটে ঘরে তুলতে শুরু করেছেন কৃষক। ভালো দাম পাওয়া গেলে বেশি লাভবান হওয়া যাবে। চরের জমিতে আবাদ করতে খুব বেশি টাকার প্রয়োজন হয় না। চরের জমিতে ফসল ফলিয়ে অনেকেই স্বাবলম্বী হয়েছেন।
দৌলতপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম বলেন, গম কাঁটা ও মাড়াই শুরু হয়েছে। এবার উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গমের ফলন ভাল হয়েছে। শ্রমিক সংকট হওয়ায় কম্বাইন হারভেস্টার সরকারি ভর্তুকি কৃষকদের দেয়া হয়েছে। হারভেস্টার মেশিন দিয়ে গম কাঁটা ও মাড়াইয়ে কৃষকের খরচ ও শ্রম বাঁচে। এতে কৃষকরা বেশি লাভবান হচ্ছেন।